Saturday, 28 June, 2025
Logo

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েও ঘটছে মানবাধিকার লঙ্ঘন

অনলাইন ডেস্কঃ

Published: / Times Read


ছবি - সংগৃহীত

বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়েও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে। এতে বলা হয়েছে, গত ৫ আগস্টের পর থেকে পরবর্তী সময়ে সহিংস বিশৃঙ্খল জনতা, পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীসহ বিভিন্ন ব্যক্তিকে নিশানা করে হত্যাসহ গুরুতর প্রতিশোধমূলক কর্মকাণ্ড করেছে। জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধানী দলের প্রতিবেদনে এমন তথ্যও উঠে এসেছে।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ দীর্ঘ সময় ধরে বিচারহীনতা ও প্রতিশোধের চক্রের মধ্যে আছে। ফলে  আগস্ট পরবর্তী সময় হিন্দু, আহমদিয়া মুসলিম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সদস্যরাও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয়েছেন। তাদের বাড়িঘরে হামলা ও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। হামলা হয়েছে মাজার, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায়। রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়, এমন ব্যক্তিদের এসব অপরাধের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিয়ে ভুক্তভোগীদের মানবাধিকার রক্ষা করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।

উল্টো গত বছরের ১৪ অক্টোবর সরকার ঘোষণা দেয় যে- ‘শিক্ষার্থী ও জনতা, যাদের কারণে গণ–অভ্যুত্থান সফল হয়েছে, তারা কোনও বিচার, গ্রেপ্তার ও হয়রানির সম্মুখীন হবেন না। বেশির ভাগ সহিংসতা আত্মরক্ষার্থে ও তুমুল উসকানির বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া হিসেবে ঘটেছে’। 

কিন্তু ওএইচসিএইচআর মনে করে, হত্যা, যৌন নিপীড়ন, লুটতরাজ, আবাসিক ভবনে অগ্নিসংযোগ এবং জাতিগত, ধর্মীয় ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার ক্ষেত্রে দোষীদের ছাড় দেওয়া যাবে না। আগস্টের শুরু থেকে যারা প্রতিশোধমূলক সহিংসতা এবং নির্দিষ্ট ধর্মীয় গোষ্ঠী ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ওপর নির্যাতন–নিপীড়ন চালাচ্ছেন, তাদের অনেকে দৃশ্যত এ দায়মুক্তি পাচ্ছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আগস্টের শুরুর দিকে বিগত সরকার ক্রমেই নিয়ন্ত্রণ হারাতে থাকে। এ সময় জনতা প্রতিশোধমূলক হত্যাকাণ্ডসহ অন্যান্য সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, আওয়ামী লীগের সমর্থক হিসেবে ধারণা করা ব্যক্তি, পুলিশ ও আওয়ামী লীগ–সমর্থক হিসেবে বিবেচিত সংবাদমাধ্যমে হামলা চালানো হয়।

বিক্ষোভের আগে–পরে হিন্দু সম্প্রদায়, আহমদিয়া মুসলিম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সদস্যরা ‘মব’–এর সহিংস হামলার শিকার হন। বিভিন্ন উদ্দেশ্য নিয়ে পরিচালিত এসব হামলায় জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপির কিছু সমর্থক এবং স্থানীয় নেতারাও জড়িত হন। তবে প্রাপ্ত তথ্যমতে, এসব ঘটনা দলগুলোর জাতীয় নেতৃত্ব থেকে পরিকল্পিত বা সংগঠিত বলে দেখা যায়নি। দলগুলোর নেতারা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে পরিচালিত সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছেন।

পুলিশের তথ্য অনুসারে, এ পর্যন্ত ১ হাজার ১৮১টি মামলায় ৯৮ হাজার ১৩৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৫ হাজার ৩৩ জন রাজনৈতিক নেতা, অর্থাৎ একটি মামলায় গড়ে ২১ জন রাজনৈতিক নেতাসহ ৮৪ জন আসামি। এ ধরনের গণহারে করা মামলা এটাই বোঝায় যে অপরাধের সঙ্গে যুক্ত নন, এমন অনেক ব্যক্তি হয় গ্রেপ্তার হয়েছেন অথবা তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।

Share

More News


Most Read